Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ৩১st ডিসেম্বর ২০১৭

পাতকুয়া ভিডিও

পানীয় জল এবং সীমিত আকারে সবজি চাষ এর জন্য পাতকুয়া নির্মাণ:

বাংলাদেশের মৃত্তিকা অঞ্চলগুলোর মধ্যে বরেন্দ্র অঞ্চল একটা বিশেষ মৃত্তিকা অঞ্চল। অন্যান্য অঞ্চলের ন্যায় এ অঞ্চলে ভূ-গর্ভের পানির স্তর মোটেই সমুদ্ধ নয়। ঠাঁ ঠাঁ বরেন্দ্র অঞ্চলে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর এতই অনুন্নত যে তা গভীর নলকূপ বা অগভীর নলকূপ দ্বারা উত্তোলন সম্ভব হয় না, তবে এসব এলাকায় পাতকূয়া খনন করলে কুয়ায় পানি জমে। কুয়ায় জমা পানি উত্তোলন করে খাবার পানি ও গৃহস্থালিক কাজে ব্যবহারসহ কম সেচ লাগে এরূপ ফসল চাষ করা সম্ভব। সন্তোষজনক পানি পাওয়ার জন্য প্রায় ছেচল্লিশ ইঞ্চি ব্যাসের একশো বিশ/ত্রিশ ফুট গভীর পর্যন্ত খনন করা প্রয়োজন হয়।উক্ত এলাকায় আদিবাসী লোকজন এরুপ পাতকুয়া তৈরী করতে অসমর্থ হওয়ায় তারা খুব কষ্টে জীবন ধারণ করে এবং তাদের জমিতে কোন ফসল ফলাতে পারে না।বিষয়টি উপলব্ধি করে বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় কৃষি মন্ত্রী, মতিয়া চৌধুরী এম পি’র পরামর্শে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ঠাঁ ঠাঁ বরেন্দ্র এলাকায় পাতকুয়া খনন কার্যক্রম শুরু করে। কুয়ার অনেক নীচে থেকে প্রচলিত পদ্ধতিতে দড়ি বালতি ব্যবহার করে পানি উত্তোলন করা বেশ কষ্ট সাধ্য। উক্ত অসুবিধা দুর করার জন্য সোলার প্যানেল ব্যবহার করে পানি উত্তোলন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সোলার প্যানেলগুলি প্রচলিত লম্বা সারিতে ব্যবহার না করে মাননীয় মন্ত্রীর পরামর্শে কিছুটা ফানেল আকৃতি করে স্থাপন করা হয়, যাতে বৃষ্টির পানি জমে কুয়ায় পতিত হয়। এটা মাননীয় মন্ত্রীর একটি বিশেষ উদ্ধাবন। পাতকুয়ার জমা হওয়া পানি সাবমারসিবল সোলার পাম্প ব্যবহার করে কুয়ার উপর স্থাপিত ট্যাংকীতে জমা করা হয়। ট্যাংকীতে জমাকৃত পানি পিভিসি পাইপ লাইনের মাধ্যমে পাতকুয়ার নিকট স্থাপিত ট্যাপ হতে জনসাধারন পান করা ও গৃহস্থালির কাজের জন্য সংগ্রহ করে এবং চাষযোগ্য জমিতে পাইপ লাইন নির্মান ও বিভিন্ন স্থানে ফসেট/আউটলেট স্থাপন করে ফসেট/আউটলেট থেকে সরাসরি ও ফিতা পাইপের মাধ্যমে সেচের পানি ব্যবহার করা হয়। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক খননকৃত ছয়টি পাতকুয়ার কার্যক্রম বর্তমানে সোলার পাম্পের সাহায্যে পরিচালনা করা হচ্ছে। উপকারভোগী লোকজন পাতকুয়ার পানি খাবার পানি হিসাবে পান ও গৃহস্থালির কাজে ব্যবহার করা ছাড়াও কম সেচ লাগে এমন ফসল যেমনঃ আলু, পটল, পিয়াজ, মরিচ, রসুন, পূইশাক, মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়া, শসা, বেগুন, সিম, লাউ, ছোলা ও মসুর ইত্যাদি চাষ করে লাভবান হচ্ছে। বৃষ্টির পানি সংরক্ষিত হচ্ছে এবং খুব সামান্য পানি লাগে এরূপ ফসল উৎপাদন করার ফলে পানির মিতব্যয়ী ব্যবহার হচ্ছে যা পরিবেশের কোন ক্ষতি করছে না। ইতিমধ্যে গত ৭ আগষ্ট ২০১৬ তারিখে “বরেন্দ্র এলাকায় পাতকুয়া খননের মাধ্যমে স্বল্প সেচের ফসল উৎপাদন” শীর্ষক একটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। প্রকল্পটির প্রধান উদ্যেশ্যঃ পাতকুয়া খননের মাধ্যমে সংরক্ষিত পানি দ্বারা স্বল্প সেচের ফসল উৎপাদন ও খাবার পানিসহ গৃহস্থালি কাজে পানি সরবরাহ। উক্ত প্রকল্পের আওতায় রাজশাহী বিভাগের ঠাঁ ঠাঁ বরেন্দ্র এলাকা চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলার ৩টি (চাঁপাই নবাবগঞ্জ সদর, গোমস্তাপুর ও নাচোল) এবং নওগাঁ জেলার ৬টি (নিয়ামতপুর, মহাদেবপুর, পত্নীতলা, ধামুইরহাট, সাপাহার ও পোরশা) মোট ৯টি উপজেলায় ৪৫০টি পাতকুয়া খনন করে ১৩৫০ হেক্টর জমিতে স্বল্প সেচের ফসল উৎপাদনসহ ৩৩৭৫০ জন জনসাধারণকে খাবার ও গৃহস্থালির কাজে পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে।